গাজায় প্রতি ঘণ্টায় দুজন মায়ের মৃত্যু: জাতিসংঘ

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ‘প্রতি ঘণ্টায় দুজন মাকে হত্যা’ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ নারী সংস্থা। 

শুক্রবার এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক সিমা বাহাউস। 

সংখ্যাটির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে সবচেয়ে বেশি প্রাণ হারাচ্ছেন নারী ও শিশুরা। এখন পর্যন্ত সেখানে প্রায় ১৬ হাজার নারী ও শিশু নিহত হয়েছেন। সংস্থাটি বলছে, গাজার সংঘাতে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় দুজন মায়ের মৃত্যু হচ্ছে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরাইল ও হামাসের মধ্যকার সংঘাত শুরুর পর থেকে গাজায় নিহতদের মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী এবং কন্যাশিশু। এ ছাড়া যুদ্ধের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ১০ হাজার শিশু নিজেদের বাবাকে হারিয়েছে। অপরদিকে বাস্তচ্যুতদের মধ্যে ১০ লাখই নারী এবং কন্যাশিশু।

জাতিসংঘের নারীবিষয়ক সংস্থা জানিয়েছে, নারী ও কন্যাশিশুরা নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা এবং আশ্রয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আসন্ন অনাহার ও দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হচ্ছেন তারা।

গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এর পরেই গাজায় পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইসরাইল। তিন মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় অভিযানের নামে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের হত্যা করা হচ্ছে।

গাজায় সংঘাত শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ২৪ হাজার ৭৬২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৬২ হাজার ১০৮ জন।

এদিকে গাজায় যুদ্ধ না থামা পর্যন্ত ইসরাইলকে স্বীকৃতি ও সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে কোনো কথা বলবে না বলে জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব। 

বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সভায় এ কথা স্পষ্ট জানিয়ে দেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত রাজকুমারী রীমা বিনতে বান্দর আল-সৌদ।

তিনি বলেছেন, ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণকে সৌদি আরবের নীতির কেন্দ্রস্থলে রাখা হয়নি। সৌদি নীতির কেন্দ্রে রাখা হয়েছে শান্তি ও সমৃদ্ধিকে।

রাজকুমারী রীমা বলেন, সৌদি আরব এ বিষয়ে যথেষ্ট স্পষ্ট। যতদিন পর্যন্ত (ফিলিস্তিনে) সহিংসতা চলছে, হত্যাকাণ্ড অব্যাহত থাকছে, আমরা পরের দিন সম্পর্কে কথা বলতে পারি না। ইসরাইল-হামাসের মধ্যে এই যুদ্ধ শুরুর এক সপ্তাহ পরেই সৌদি আরব জানিয়ে দেয়, তারা ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের আলোচনা স্থগিত করেছে।

তবে গাজায় যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরেও স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হবে না বলে যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। যদিও তার এই কথার সঙ্গে একমত নয় ওয়াশিংটন। তারা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র বরাবরের মতোই দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে রয়েছে।