সংসদ উপনেতার পদ একজন নারীকে দিয়েই পূরণ করব- প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের সংসদে স্পিকার, সংসদ নেতা, বিরোধীদলীয় নেতা এবং সংসদ উপনেতা এ চারজনই নারী। দুর্ভাগ্যের বিষয়, আপনারা জানেন— আমাদের সংসদ উপনেতা বেগম সাজেদা চৌধুরী কিছু দিন আগে মৃত্যুবরণ করেছেন। তবে এই শূন্যস্থান পূরণ আমরা একজন নারীকে দিয়েই করব।

তিনি বলেন, আমাদের সবাই যোগ্য । নারী বা পুরুষ কাউকে আমি অযোগ্য বলছি না। কিন্তু আমাদের এই সমাজকে তো উৎসাহিত করতে হবে। সেটিই আমার লক্ষ্য, সেটিই আমরা করে যাচ্ছি।শুক্রবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘বেগম রোকেয়া দিবস-২০২২ ও বেগম রোকেয়া পদক-২০২২’ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন তিনি ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। নারী জাগরণের মধ্য দিয়েই ১৯৪১ সাল নাগাদ সেই বাংলাদেশকে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এ জন্য ডেল্টা প্ল্যানও করেদিলাম, যাকে ভিত্তি করে প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে পারে।

তিনি বলেন, তার সরকার সারা দেশে ডিজিটাল সেন্টার ও ফ্রি ল্যান্সারদের স্বীকৃতি দিয়েছে এবং ‘লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং’ প্রজেক্টের মাধ্যমে নারীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। যেখানে উদ্যোক্তা একজন নারী এবং একজন পুরুষ। সেখানে সবচেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছে দেশের নারী সমাজ। আর এর মাধ্যমে স্বল্প শিক্ষিত একজন নারীও ঘরে বসে অর্থ উপার্জন করতে পারে।

কাজেই সারাদিন ওই ফেসবুক আর এসব না দেখে তারা যদি এই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেয়, ফ্রিল্যান্সিং করে তা হলে কিন্তু সেখানে বসে সে কিছু অর্থ উপার্জন করতে পারে। একটি প্রত্যন্ত ইউনিয়নে বসে কিছু শিক্ষা নিয়ে সে দেশে-বিদেশে অর্থ উপার্জনের সুযোগ পাচ্ছে। যেটি অনেক ছেলেমেয়ে করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা কম্পিউটার প্রযুক্তি শিক্ষা একেবারে জেলা এবং উপজেলাভিত্তিক করে দিয়েছি। গ্রামে গ্রামে সুবিধার জন্য ‘তথ্য এপিএ’ সার্ভিস চালু করেছি এবং এর মধ্য দিয়ে বেগম রোকেয়ার স্বপ্নপূরণ প্রায় হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আমাদের নারীদের শিক্ষা, নারীদের জাগরণ, নারীদের যতটুকু অর্জন— এর পেছনে বেগম রোকেয়ার অবদান রয়েছে। ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়ার জন্মদিন। তিনি যদি সেই অচলায়তন ভেঙে নিজে শিক্ষাগ্রহণ করে মেয়েদের শিক্ষার ব্যবস্থা না করতেন, তা হলে আমরা আজকে যে যেখানে আছি, কেউ থাকতে পারতাম না।

প্রধানমন্ত্রী তৃতীয় লিঙ্গ প্রসঙ্গে বলেন, এরা তো কোনো অপরাধ করেনি! এরা তো বাবা-মায়েরই সন্তান। বাবা-মাকে ফেলে দিয়ে তাদের রাস্তায় চলে যেতে হবে কেন? তাদের কোনো জীবন-জীবিকার কিছু থাকবে না— এটি তো হতে পারে না। শুধু নারী অধিকার-নারী অধিকার বলে অনেকে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। কখনো এ শ্রেণির কথা কেউ চিন্তা করেননি। আমরা সংবিধানে তাদের স্বীকৃতি দিয়েছি। তারা বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকবে, লেখাপড়া শিখবে, চাকরি পাবে, কাজ-প্রশিক্ষণ পাবে, একটা সুস্থ জীবন তারা পাবে। প্রতিটি ফরমে নারী-পুরুষের সঙ্গে থার্ড জেন্ডার আমরা লাগিয়ে দিয়েছি।