স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য যাওয়ার পর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আজ বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে তিনি গুলশানের বাসা থেকে হাসপাতালে পৌঁছান। রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত সেখানে তাঁর কিছু শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপি নেতা এ জেড এম জাহিদ হোসেন রাতে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের স্বাস্থ্যের কিছু জটিলতা রয়েছে। সে জন্য মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জাহিদ হোসেন আরও জানান, রাতে হাসপাতালে আসার পরই সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের কিছু পরীক্ষা করা হয়। আরও কিছু পরীক্ষা করা হবে। তিনি উল্লেখ করেন, নতুন করে যেসব জটিলতা দেখা দিয়েছে, সেগুলোর সমাধানের জন্য তাঁকে কয়েক দিন হাসপাতালে থাকতে হতে পারে। তবে তা মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে।
বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান প্রথম আলোকে বলেন, ৩৩ দিন পর আবার বিএনপির নেত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হলো। এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপির নেত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়েছিল।
গত বছরের ৯ আগস্ট খালেদা জিয়াকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পাঁচ মাসের বেশি সময় চিকিৎসা শেষে গত ১১ জানুয়ারি গুলশান-২ নম্বরের ৭৯ নম্বর সড়কে তাঁর বাসা ফিরোজায় ফেরেন বিএনপির চেয়ারপারসন।
উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে তাঁর পরিবার থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হলেও অনুমতি পাওয়া যায়নি। এমন পরিপ্রেক্ষিতে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসনের রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত বছরের ২৭ অক্টোবর।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে খালেদা জিয়ার রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। তাঁর স্বাস্থ্য কিছুটা স্থিতিশীল হলে সে দফায় পাঁচ মাসের বেশি সময় পর তাঁকে বাসায় নেওয়া হয়। এখন স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।
দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির চেয়ারপারসন ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দী হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দী ছিলেন তিনি।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাজা ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছিল। তখন থেকে ছয় মাস পরপর তাঁর সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।