পাকিস্তানের ফার্স্ট লেডি হতে যাওয়া কে এই আসিফা ভুট্টো

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি তার মেয়ে আসিফা ভুট্টোকে দেশের ফার্স্ট লেডি হিসেবে ঘোষণা করতে যাচ্ছেন বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। পাকিস্তানি গণমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) তথ্য সচিব ফয়সাল করিম কুন্দি সোমবার (১১ মার্চ) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আনুষ্ঠানিকভাবে ফার্স্ট লেডি ঘোষণার পর আসিফা ভুট্টো ফার্স্ট লেডির প্রটোকল ও সরকারি সব সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

আসিফ আলি জারদারি যদি সত্যিই ফার্স্ট লেডি হিসেবে তার মেয়ের নাম ঘোষণা করেন, তবে পাকিস্তান ঐতিহ্য ভেঙে নতুন ধারায় প্রবেশ করবে। সাধারণত প্রেসিডেন্টের স্ত্রীই ফার্স্ট লেডি হন। কিন্তু ২০০৭ সালে জারদারির স্ত্রী বেনজির ভুট্টো আততায়ীর গুলিতে নিহত হওয়ার পর আর বিয়ে করেননি তিনি। তাই এবার মেয়ে আসিফাকে ফার্স্ট লেডি করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অবশ্য সাবেক সামরিক শাসক ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান ১৯৫৮ সালে রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তার মেয়ে নাসিম আওরঙ্গজেবকে ফার্স্ট লেডি হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন। 

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অনেক দৃষ্টান্ত রয়েছে যেখানে রাষ্ট্রপতি বিপত্নীক হওয়ার পর তাদের মেয়ে, বোন এবং এমনকি ভাতিজিকে তাদের ফার্স্ট লেডি ঘোষণা করা হয়েছিল।

আসিফা ভুট্টো জারদারির আরও যত পরিচয়

আসিফ আলি জারদারি–বেনজির ভুট্টো দম্পতির কনিষ্ঠ সন্তান আসিফা ভুট্টো জারদারির জন্ম ১৯৯৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে। বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি তর বড় ভাই এবং বখতাওয়ার ভুট্টো জারদারি তার বড় বোন।

আসিফা ভুট্টো জারদারি অক্সফোর্ড ব্রুকস ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন ও এডিনবার্গ ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেছেন। তিনি ২০২০ সালে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) এক সমাবেশে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতির মাঠে নামেন।

পোলিও নির্মূলে পাকিস্তানের দূত হিসেবেও কাজ করেন ৩১ বছর বয়সী আসিফা ভুট্টো জারদারি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স ও ফেসবুকে রয়েছে তার সরব উপস্থিতি। প্রায়ই তাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ে রাজনৈতিক মন্তব্য করতে দেখা যায়।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের সাধারণ পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচনের আগে আসিফাকে তার ভাই বিলাওয়াল ভুট্টোর পক্ষে বিভিন্ন সমাবেশ ও নির্বাচনী প্রচারণায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে।

গত রোববার পাকিস্তানের ১৪তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) কো–চেয়ারম্যান আসিফ আলি জারদারি। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পদ নিয়ে ভোট হয় শনিবার। এতে ৪১১ ভোট পান আসিফ আলি জারদারি। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পিকেএমএপির চেয়ারম্যান মেহমুদ খান আসাকজাই পান মাত্র ১৮১ ভোট। এরপর আসিফ আলি জারদারিতে জয়ী ঘোষণা করে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন ইসিপি।

এ নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হলেন তিনি। এর আগে ২০০৮ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত জারদারি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। সেই সময়ে পাকিস্তানের ফার্স্ট লেডির পদ খালিই ছিল। এবার সেই পদে আসিফা ভুট্টোর নাম বেশ জোরেসোরেই শোনা যাচ্ছে।