গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে প্যারিসে চলছে শান্তি আলোচনা

ইসরাইলের আক্রমণে গাজা ভূখণ্ডে কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে শনিবার জানিয়েছে হামাস-শাসিত অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এদিকে ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান ডেভিড বার্নির নেতৃত্বে একটি ইসরাইলি প্রতিনিধিদল আপস আলোচনার জন্য বর্তমানে প্যারিসে রয়েছে। এই আলোচনার লক্ষ্য হচ্ছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস সদস্যদের হাতে বন্দি অবশিষ্ট পণবন্দীদের ফিরিয়ে আনা।

প্যারিসে শান্তি মধ্যস্থতাকারীরা গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফায় ইসরাইলি আক্রমণ এড়ানোর জন্য গাজায় অস্ত্র বিরতি নিশ্চিত করার আশায় আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। সেখানে ১০ লাখেও বেশি লোক আশ্রয় নিয়েছে।

দেইর আল বালাহ, খান ইউনিস এবং রাফাসহ গাজার বিভিন্ন স্থানে ইসরাইল শুক্রবার ৭০টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শনিবার জানায় কমপক্ষে ৯০ জন এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছে । ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধে ফিলিস্তিনি অঞ্চলে এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৯,৬০০-এ।

এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে ৭ অক্টোবর সংঘাত শুরু হবার পর থেকে ফিলিস্তিনি অঞ্চলে প্রায় ২৯,৭৩৭ জন আহত হয়েছে।

ইসরাইল বলছে, শিগগিরই কোন চুক্তি না হলে তারা রাফা শহরে আক্রমণ চালাবে। ওয়াশিংটন তার এই মিত্র রাষ্ট্রটিকে সে রকমটি করতে নিষেধ করছে এবং বলেছে এ ধরণের আক্রমণে আরও বহু অসামরিক লোকজন হতাহত হবে।

ওই অঞ্চলের লোকজনের মধ্যে হতাশা ও খাবারের অভাব বিরাজ করছে।

এদিকে চলতি সপ্তাহে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী বলেছে তাদের টিম, ‘নজিরবিহীন স্তরের হতাশার” কথা জানিয়েছে এবং জাতিসঙ্ঘও সতর্ক করে দিয়েছে যে প্রায় ২২ লক্ষ লোক দুর্ভিক্ষের কবলে পড়তে যাচ্ছে।’

শুক্রবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, গাজার উত্তরাঞ্চলের জাবালিয়া শহরে পুষ্টিহীনতার কারণে দু’মাসের এক শিশু মারা গেছে।

জাতিসঙ্ঘ শিশু সংস্থা ইউনিসেফ সতর্ক করে দিয়েছে যে খাদ্যাভাব এবং ক্রমবর্ধমান পুষ্টিহীনতা ও ব্যাধির কারণে গাজায় বিপুল সংখ্যক শিশুর মৃত্যু হতে পারে।

এদিকে এই গত সপ্তাহে একটি সন্ধিচুক্তি নিয়ে আলোচনার উদ্দেশ্যে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া কায়রোতে মিসরের মধ্যস্থতাকারীদের সাথে দেখা করেছেন। ডিসেম্বরের পর এটি ছিল তার প্রথম কায়রো সফর।

বিষয়টির স্পর্শকাতরতার কারণে নিজের নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক হামাস কর্মকর্তা বলেন যে মিসরীয়দের সাথে আলোচনায় তাদের এই জঙ্গি গোষ্ঠটি নতুন কোন প্রস্তাব দেয়নি এবং তারা অপেক্ষা করে আছেন যে ইসরাইলের সাথে আলোচনার পর মধ্যস্থতাকারীরা কী প্রস্তাব নিয়ে আসবেন।

৭ অক্টোবর হামাস ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে আক্রমণ চালানোর সময়ে পণবন্দীদের মধ্যে এখনো ১০০ জনকে পণবন্দি করে রেখেছে।

এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে । ইসরাইল, মিসর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।

হামাস বলছে, চুক্তির অংশ হিসেবে গাজা থেকে ইসরাইল সরে আসলে তারা পণবন্দীদের মুক্তি দেবে।

নেতানিয়াহু হামাসের এই প্রস্তাবকে ভাঁওতাবাজি বলে নাকচ করে দিয়েছেন।