পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার তিন দিন পরও সরকার গঠন নিয়ে অনিশ্চয়তার অবসান হয়নি। সরকার গঠন নিয়ে নানামুখী তৎপরতা দেখা গেলেও এখনো দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) সমর্থনপুষ্ট স্বতন্ত্র, পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন), পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) সবাই সরকার গঠনে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
শনিবার রাতে পিএমএল-এনের সভাপতি এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন পিপিপির সভাপতি এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি আসিফ জারদারির সাথে। বৈঠকে জারদারি তার ছেলে বিলওয়াল ভুট্টোকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী করার প্রস্তাব দিয়েছেন। এর বিনিময়ে পাঞ্জাবে সরকার গঠন করতে পিএমএল-এনকে সমর্থন করার প্রস্তাব করেছেন। কিন্তু পিএমএল-এনের কাছে তা যৌক্তিক কারণেই গ্রহণযোগ্য হয়নি।
একটি সূত্র জানিয়েছে, পিএমএলএন ইতোমধ্যেই জোট সরকার গঠন করা নিয়ে এমকিউএম, জেইউআইএফ এবং আরো কয়েকটি ছোট দলের সাথে আলোচনা করছে।
সূত্রটি দাবি করেছে, প্রয়োজনে তারা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নওয়াজ শরিফের বিকল্প প্রস্তাবও বিবেচনা করছে। এই ব্যবস্থার আলোকে শাহবাজ শরিফকে প্রধানমন্ত্রী এবং নওয়াজের মেয়ে মরিয়ম নওয়াজকে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী করার কথাও বিবেচনা করা হচ্ছে।
এদিকে পাকিস্তানের আইনে স্বতন্ত্র সদস্যরা পার্লামেন্টের সংরক্ষিত আসনের অধিকারী হতে পারে না। এর অর্থ হলো, ওই ৭০টি আসন চলে যাবে বিভিন্ন দলের হাতে। প্রত্যক্ষ ভোটের আলোকে পিএমএল-এন পেতে পারে ২০টি আসন। এতে করে সরকার গঠনে তাদের কিছু সুবিধা হবে।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানে ২৬৬টি আসনে সরাসরি নির্বাচন হয়। সংরক্ষিত ৭০টি আসনের মধ্যে ১০ আবার অমুসলিম সদস্যদের জন্য নির্ধারিত। বাকি ৬০টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত।
পিএমএল-এন-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, আসিফ জারদারি কেবল বিলাওয়ালকে প্রধানমন্ত্রীর পদ দেয়ার দাবিই জানাননি, এছাড়া আরো আরো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর পদ দাবি করেছেন।
শাহবাজ শরিফ দলের নেতাদের জারদারির সাথে তার বৈঠকের ফলাফল নিয়ে আলোচনাকালে তা প্রকাশ করেছেন বলে সূত্রটি জানিয়েছে। সূত্রটি জানায়, শাহবাজ বলেছেন যে এর বিনিময়ে পিপিপি পাঞ্জাবে সরকার গঠন করার ব্যাপারে পিএমএল-এনকে সমর্থন দেবে।
এদিকে পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি পৃথক এক মন্তব্যে বলেছেন, তার দলের সমর্থন ছাড়া কেন্দ্র, পাঞ্জাব বা বেলুচিস্তানে কেউ সরকার গঠন করতে পারবে না। তার দল সংলাপের জন্য প্রতিটি দলের কাছে উন্মুক্ত। কারণ, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য সমঝোতার দরকার।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত তার দল পিএমএল-এন, পিটিআই বা অন্য কোনো দলের সাথে আনুষ্ঠানিক আলোচনা করেনি। ফলাফল চূড়ান্ত হওয়ার পর দলের নির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে। তারাই পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবে।