ফ্রান্সে নারীর গর্ভপাতের অধিকারকে সাংবিধনিক করতে বিল পাস করেছে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি, এবার হবে ভোটাভুটি। প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ নারীদের এই অধিকারকে সংবিধানসম্মত করতে বদ্ধপরিকর। ফ্রান্সের পর্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে এই বিল বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে পাস হয়েছে। বিলের পক্ষে ভোট পড়ে ৪৯৩টি ও বিপক্ষে মাত্র ৩০টি।
ম্যাখোঁর নেতৃত্বে জোট এবং বিরোধী বামপন্থীরা সবাই এই বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। বিচারবিভাগীয় মন্ত্রী মোরেত্তি জানিয়েছেন, ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে নারীদের ইতিহাসের একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত সৃষ্টি হলো।
ফ্রান্সে সংবিধান সংশোধন করতে গেলে পর্লামেন্টের দুই কক্ষেই বিলটি প্রথমে অনুমোদন করাতে হয়। তারপর হয় গণভোট অথবা পর্লামেন্টের যৌথ অধিবেশনে পাঁচ ভাগের তিন ভাগ সদস্য যদি বিলের পক্ষে ভোট দেন, তাহলে সংবিধান সংশোধন করা যায়।
ম্যাখোঁর সরকার দ্বিতীয় পথটি নিয়েছে। যদিও ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে বিলটি নিয়ে যে ধরনের সমর্থন ম্যাখোঁ পেয়েছেন, নিম্নকক্ষ বা হাউস অব রিপ্রেসেন্টেটিভসে তা পাবেন কি না, এ নিয়ে সংশয় আছে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি সিনেটে বিলটি নিয়ে আলোচনা শুরু হবে।
ফ্রান্সের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কেউই গর্ভপাতের অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তোলেনি।
কিন্তু সিনেটে কিছু দক্ষিণপন্থী সদস্য এটা চাইছেন না, সংবিধানে গর্ভপাতের বিষয়টি থাক। তাদের বক্তব্য, এটা সাংবিধানিক বিষয় নয়। ফ্রান্সে গর্ভপাতের সুযোগ নিয়েও কোনো প্রশ্ন নেই।
ফ্রান্সে গর্ভপাত কি বৈধ?
১৯৭৫ সালে ফ্রান্সে একটি আইন পাস করা হয় এবং সেখানে বলা হয়েছে, গর্ভপাত কোনো অপরাধ নয়। কিন্তু সংবিধানে গর্ভপাতের অধিকারের গ্যারান্টি দেওয়া হয়নি।
তার পর থেকে গর্ভপাতের শর্তগুলো ভালো করার জন্য আরো আইন পাস হয়েছে। বিশেষ করে নারীদের স্বাস্থ্য ও তাদের নাম প্রকাশ যাতে না হয়, সেদিকটা নিশ্চিত করার চেষ্টা হয়েছে। নারীদের ওপর আর্থিক চাপ কম করার চেষ্টা হয়েছে। সরকারি তথ্য বলছে, ২০২২ সালে ফ্রান্সে দুই লাখ ৩৪ হাজার গর্ভপাত হয়েছে। ২০২২ সালের নভেম্বরে জনমত সমীক্ষার ফল হলো, ৮৯ শতাংশ মানুষ গর্ভপাতের অধিকারকে সাংবিধানিক করার পক্ষে।