তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ যারা সমাজে হিজড়া নামে পরিচিত তারা সর্বপ্রথমে নিগৃহীত হন তাদের নিজ পরিবারে।
নিজের লিঙ্গ পরিচয় তাদের কে বোঝানোর জন্য রীতিমত যুদ্ধ করতে হয় পরিবারের সঙ্গে।
পরিবারের সদস্যরা কোনভাবেই মেনে নিতে পারেন না যে, তাদের যে সন্তান পুরুষ বা নারীর লিঙ্গ পরিচয় নিয়ে জন্ম নিয়েছে সে একটা বয়সের পর বিপরীত লিঙ্গের একজনের মত আচরণ করবে।
পরিবারের সদস্যরা কেন মেনে নেয় না? এই উত্তর জানতে আমি কথা বলেছিলাম এমন একজনের সঙ্গে যার ছেলে সন্তান এখন রূপান্তরিত নারী হিসেবে পরিচিত।
তিনি তার পরিচয় গোপন করে বলেছেন “আমার যে ছেলে ছিল সে তো এখন হিজড়া হয়ে গেছে। আমি তাকে অনেক চিকিৎসা করিয়েছি, আলাদা ঘর করে দিয়েছি কিন্তু সে থাকেনি। আমার আরো সন্তান আছে, পরিবারের আরো মানুষ আছে। সবার কথা চিন্তা করে আমি তাকে মানতে পারিনি”।
“আমি বলেছি যদি ভালো হয়ে যাও কোনদিন অর্থাৎ পুরুষ হয়ে যাও তাহলে ফিরে আসবে। আশে পাশের লোকজনকে বলেছি সে বিদেশে থাকে”।
তিনি এটাও বলেছেন তিনি মনে করেন তার একটা সন্তান মারা গেছে।
এই ব্যক্তি জানেন তার রূপান্তরিত কন্যা কোথায় আছেন, কী করছেন কিন্তু এখন পর্যন্ত তাকে তিনি মেনে নিতে চান না।
হিজড়া জনগোষ্ঠীর অধিকার নিয়ে আন্দোলনকারীরা বলেছেন,যেসব অভিযোগ তারা পান, তার বড় অংশই হিজড়াদের বাবা-মায়ের সম্পত্তির ভাগ না পাওয়ার বিষয়ে।
হিজড়া জনগোষ্ঠীর অধিকার নিয়ে আন্দোলনকারীরা বলেছেন,যেসব অভিযোগ তারা পান, তার বড় অংশই হিজড়াদের বাবা-মায়ের সম্পত্তির ভাগ না পাওয়ার বিষয়ে।
পরিবারের সদস্যদের না মানার পেছনে সমাজের একটা চাপ তাদের উপর তৈরি হয়।
সেই চাপকে অনেকেই উপেক্ষা করতে পারেন না।
নজরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি বলছিলেন যখন তার ভাই মেয়েদের মত আচরণ করা শুরু করে তখন তাদের পরিবারকে গ্রামের মধ্যে একঘরে করে দেয়ার উপক্রম হয়েছিল।
মি. ইসলাম বলেন, “আমাকে, আমার বাবাকে গ্রামের লোকজন বলতো তোমার ছেলে তো হিজড়া, সে তো নোংরা, কেন তাকে বাড়িতে রাখো? স্কুল থেকে শিক্ষকরা আমার বাবাকে বলতো আমার ভাইয়ের জন্য অন্যদের পড়াশোনা হবে না, তারা খারাপ হয়ে যাবে”।