যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় আগুনে পুড়ে পুতুল দাস (১৬) নামে অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সকালে ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে ঝিকরগাছা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের কাউনিয়া দাসপাড়ার বাড়িতে স্বামী-স্ত্রী দগ্ধ হন। পরিবারের অভিযোগ, পুতুলের স্বামী প্রদীপ দাস আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে।
তবে প্রদীপের দাবি, স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া বিবাদের এক পর্যায়ে পুতুল নিজেই গায়ে আগুন দিয়েছে। ঠেকাতে গিয়ে তিনিও দগ্ধ হয়েছেন। পুলিশ তাদের দুজনকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। পুতুল দাসের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকায় রেফার করা হয়।
স্বজন ও প্রতিবেশীরা জানান, মঙ্গলবার রাতে প্রদীপ ও তার স্ত্রী পুতুলের মধ্যে ঝগড়া হয়। গভীর রাতে তাদের চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা বাইরে এসে দেখেন ঘরের মধ্যে আগুন জ্বলছে। এ সময় প্রতিবেশীরা তাদের উদ্ধার করে ঝিকরগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। ঝগড়ার কারণে প্রদীপ তার স্ত্রীর গায়ে আগুন ধরিয়ে দিতে পারে বলে অভিযোগ প্রতিবেশীদের।যশোর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আহম্মেদ তারেক শামস চৌধুরী জানান, ভোররাতের দিকে দগ্ধ দম্পতিকে হাসপাতালে আনা হয়। পুতুলের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় রাতেই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হয়। এ ছাড়া আহত প্রদীপের দুটি হাত, চোয়াল ও মাথার চুল পুড়ে গেছে। তাকে সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আহত প্রদীপ দাবি করেছেন, পারিবারিক বিষয় নিয়ে পুতুলের সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। স্ত্রী নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। সঙ্গে সঙ্গে তিনি আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। এতে তার দুহাত পুড়ে যায়। পরে প্রতিবেশীরা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতাল ভর্তি করে।
প্রদীপের দাবি, মুসলিম পরিবারে তার জন্ম। তার নাম ছিল আল আমিন। ছোটবেলায় বাবা মারা যায়। তার মা মুসলিম হলেও ১০-১২ বছর আগে সনাতন ধর্মাবলম্বী কিশোর দাস নামে এক ব্যক্তিকে বিয়ে করেন। তখন থেকেই তিনি ওই সনাতন ধর্মের পরিবারে বেড়ে উঠেছেন। তার নাম হয়েছে প্রদীপ দাস। ছোটবেলা সে সনাতন ধর্ম গ্রহণ করে। পুতুলকে ভালোবেসে ৮ মাস আগে বিয়ে করেন তিনি।
ঝিকরগাছা থানার অফিসার ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান, স্বামীর দেওয়া আগুনে পুতুল দাসের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। নিহতের সৎকার শেষে পরিবার অভিযোগ দেবে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী প্রদীপ পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন আছে।