মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মমাস উদযাপন উপলক্ষ্যে প্রতিনিয়তই হারনেটের পাতাকে অলংকৃত করছেন কোনো না কোনো অনুকরণীয় নারী। তবে হারনেটের এবারের পর্বকে বিশেষ অতিথি হয়ে সমৃদ্ধ করেছিলেন যিনি, তিনি একাধারে Social Activist,Feminist, Environmentalist এবং উজ্জল এক নক্ষত্র “খুশী কবির।”
১৯৭২ সালে, বাংলাদেশ স্বাধীনতা সংগ্রামের পর, খুশি কবির বাংলাদেশী একটি বেসরকারি সংস্থায় যোগ দেন। তিনি বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায় প্রান্তিক সম্প্রদায়ের সাথে এবং মানবধিকার নিয়ে সে থেকে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।
হারনেটের সম্মানিত উপদেষ্টা হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করছেন
তিনি। নারী কল্যাণ,নারী ক্ষমতায়ন,নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা এমন একটি প্লাটফর্মের যাত্রা এশিয়ার দেশগুলোকে নিয়ে শুরু হলেও এর পদচিহ্ন একদিন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে যাবে এমন শুভকামনা দিয়েই তিনি বক্তব্য শুরু করেন।

“ললাটে যার তেজোউদ্দীপ্ত
রক্তিম অর্ষমা,কন্ঠে তারঁ বিদ্রোহী চিৎকার।” এমনই এক বলিষ্ঠ এবং দুর্দমনীয় নারীর উদাহরণ দৃষ্টিপটে ভেসে ওঠে যে নাম শুনলে তিনিই “খুশী কবির।”
প্রগতিশীল মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা প্রানবন্ত এই মুখ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চারুকলায় স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পরেই তিনি নিজ উদ্যোগ এবং অদম্য স্পৃহায় মেগাসাইক্লোন বিধ্বস্ত গ্রামাঞ্চলে ত্রাণ প্রয়াসে যুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়েই সমাজকর্মী হিসেবে আত্নপ্রকাশ করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় মহিলা, আদিবাসী এবং অন্যান্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিতকরণ, ধর্মনিরপেক্ষতা, সার্বভৌমত্ব, সর্বস্তরে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করণ,ভূমিহীন ও বস্তিবাসীকে উচ্ছেদ থেকে রক্ষা, কৃষিজমিকে চিংড়ি খামারে রূপান্তর রোধ, নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ,এবং মৌলিক অধিকার নিশ্চিতকরণে সক্রিয়তাসহ বহু জনস্বার্থমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত রয়েছেন মহীয়সী এই নারী।

অধিকার নিশ্চিতকরণে সক্রিয়তাসহ বহু জনস্বার্থমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত রয়েছেন মহীয়সী এই নারী।
মুক্তিযুদ্ধের পর,খুশি কবির বাংলাদেশের অন্যতম বেসরকারী সংস্থা “নিজেরা করি” তে সমন্বয়কারী হিসাবে যোগদান করেছিলেন।তিনি বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোর জনগণকে নিয়ে কাজ করেছেন। আন্তর্জাতিক পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশনের সদস্য হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের পরিচালক এবং ওয়ান বিলিয়ন রাইজিং এ বাংলাদেশের সমন্বয় সাধনকারী হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন।
এছাড়াও বাংলাদেশ সেনা শিবির এবং স্থাপনাগুলির জন্য জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন, ২০১৫ সালে জোন্টা জেলা – ২৫ এর আঞ্চলিক সম্মেলনে ১৪ তম দ্বিবার্ষিকীতে তিনি লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন। ২রা নভেম্বর ২০১৭ তে তিনি বাংলাদেশে ধর্ম ভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখেছিলেন এবং সংখ্যালঘুদের রক্ষায় সরকারকে আরও বেশি সক্রিয় হবার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের আহ্বান করেন। এরকম বহু দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী পদক্ষেপ গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করেছেন এই কিংবদন্তি নারীবাদী।

HerNet টিভির প্রতিষ্ঠাতা প্রধানের জন্য বার্তা ও নির্দেশনা:
প্রতিষ্ঠাতা প্রধান আলিশা প্রধানকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন সময়োপযোগী এবং প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলোকে তুলে ধরবার জন্য এত চমৎকার এবং অসাধারন ক্ষেত্র যিনি সৃষ্টি করেছেন নিশ্চয়ই তিনি প্রশংসা পাওয়ার দাবিদার। তার নিপীড়িতদের পাশে দাঁড়ানোর উদারতা সাথে দুর্দমনীয় সাহস এবং বিচক্ষণ দৃঢ়তা আমাকে বেশ অনুপ্রাণিত করে , আলিশার মাঝে আমি আমার নিজেকে দেখতে পাই, আমাদের চিন্তাধারায় একটা মিল রয়েছে।
তবে এটাও বলা দরকার যে মধ্যমতার (Mediocrity ) কোনও প্রতিযোগিতা বা হুমকি নেই আর সে জায়গায় হারনেট হলো এক বিস্ময়কর আবিষ্কার নারী কল্যানে, তাই তার এই বিপ্লবী পথে বারবার অনেক বাধা আসবে , ঝড় আসবে এবং সেগুলিকে অতিক্রম করেই নারী ও মানব কল্যাণের মাসিয়া হতে পারবে HerNet TV এবং আলিশার মধ্যে আমি সেই দৃঢ়চরিত্রের ঝলক দেখতে পাই, সে পারবে ।

QUICK NOTE- ঝটপট উত্তর
স্ট্রেংথ এবং উইকনেস:
স্ট্রেংথ হলো হাল ছেড়ে দেই না এবং বিচলিত হই না। আমার দুর্বলতা হলো অস্থিরতা।
অপছন্দনীয় এবং পছন্দীয় চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য:
ইচ্ছে করে যারা মিথ্যা বলছে এবং সুযোগ সন্ধানী লোক খুবই অপছন্দ করি বিশেষ যারা সুবিধাবঞ্চিতদের ঠকায় ।
দৃঢ়চেতা,অধ্যবসায়ী এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ মানুষ পছন্দ করি।
প্রিয় বই ও লেখক :
১. ভার্জিনিয়া উলফ. ২. মহাশ্বেতা দেবী। ৩. শাহীন আক্তার ৪.কুররাটুলাইন হায়দার । (Qurratulain Hyder)
Books: River of Fire, Fireflies in the Mist (based on A 300 years saga of a house in old Dhaka).
ভালবাসা এবং বন্ধুত্বের সংজ্ঞা?
পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সমর্থন উভয় ক্ষেত্রেই থাকা বাঞ্ছনীয়।
প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বকে কিভাবে সংগায়িত করবেন?
তিনি যে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তা উন্নয়নের ক্ষেত্রে নজিরবিহীন। তার বা তার পরিবারের বিরুদ্ধে সমস্ত অভ্যুত্থান সত্ত্বেও তার সেই সহানুভূতিশীল অন্তর রয়েছে। তিনি যেভাবে নেতিবাচকতা থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখেন তা প্রশংসনীয়। তার তীক্ষ্ণ ও ধারালো স্মৃতিশক্তি দেখে আমি বিস্মিত হই । একটি ছোট্ট সংস্থা চালানো খুব জটিল আর তিনি বাংলাদেশর মতো একটি বহুমুখী জটিল দেশকে অত্যন্ত সফলতার সাথে চালাচ্ছেন, গভীর শ্রদ্ধা ও জন্মদিনের শুভেচ্ছা তার প্রতি।
