বিশ্বে লিঙ্গ বৈষম্য হ্রাসে এশিয়ার শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। নারী ক্ষমতায়নের রূপকার হিসাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বিশ্বব্যাপী সম্মানিত, তিনি অর্জন করেছেন অজস্র অ্যাওয়ার্ড , যেমন ‘লাইফ টাইম কন্ট্রিবিউশন ফর উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট’ সাউথ সাউথ অ্যাওয়ার্ড, ‘গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ’ অ্যাওয়ার্ড ইত্যাদি। তাই তার জন্ম মাসে (২৮শে সেপ্টেম্বর) হারনেট নিউজ “WOMEN LEADS, Inspiration HPM” নামক কলামের মাধ্যমে এমন সব নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে চায় যারা এই অভূতপূর্ব ক্ষমতায়ন এবং অগ্রগতিতে বলিষ্ট ভূমিকা পালন করে চলছে । তার ধারাবাহিকতায় HerNet News এর ” ইন্টারভিউতে আজকের অতিথি কর্পোরেট ওয়ার্ল্ড এর আইকন তাসনীম সিনহার পিছনের গল্প চেয়ারপারসন, কালিয়ার রেপ্লিকা গ্রুপ।
করোনার এই ক্রান্তিকালীন পরিস্থিতিতে কেমন যাচ্ছে আপনার সময় ?
ভালো খারাপ সব মিলিয়েই চলছে। দীর্ঘদিন ঘরবন্দি থাকায় পরিবারের সাথে যোগসূত্রতাটা যেমন বেড়েছে তেমনি ব্যবসায় Ups & downs সাথে আমার সন্তান করোনায় আক্রান্ত হয়ে পড়েছে সেদিকে নজর রাখতে হচ্ছে। তারপরও সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে পেরেছি অনেকটাই। সব মিলিয়ে যদিও বেশ অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্য দিয়েই যেতে হচ্ছে সবাইকেই তবুও যতটা ভালো থাকার চেষ্টা করা যায়।

সফল ব্যবসায়ী হিসেবে যেসব সংস্থার সাথে সম্পৃক্ততা রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে যদি জানতে চাই ?
আমি কোনো সংস্থার সাথেই জড়িত নই। কেবলমাত্র নিজের ব্যবসার দিকেই ফোকাস করছি। পাশাপাশি হারনেটের একটি প্রজেক্ট নিয়েও কাজ শুরু করেছি। এককভাবেই কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছি।
নারী হওয়ায় পরিবার,কর্মস্থল কিংবা সমাজে কি ধরনের বৈষম্য ও প্রতিকূলতায় পরতে হয়েছে ?
ব্যবসায়ী বাবা ও সমাজকর্মী মায়ের ছায়ায় বেড়ে ওঠা এবং পরিবারের অধিকাংশ নারী সদস্যই বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে বিচরণ করছে। সুতরাং ভেদাভেদ এর জায়গাটা পরিবারে ছিল না। এত দূর আসতে পরিবারের পূর্ণ সমর্থনই পেয়েছি। তবে বৈষম্যের জায়গাটা দেখেছি সমাজে। এ নিয়ে তো বেশ প্রতিকূলতাকে সামাল দিতে হয়েছেই। কারণ আমার উন্নয়নশীল, পুরুষশাষিত সমাজ,নারী ব্যবসার হাল ধরবে এ কথা যেনো মানতে নারাজ। শুরুর পথ টা মসৃণ ছিল না। তবে সেই অবস্থান টা তৈরী করতে পেরেছি। লিঙ্গবৈষম্যের ওপর ভিত্তি করে নয় বরং কেউ স্বকীয়ভাবে নিজের গুনে গুনান্বিত হলে তাকে প্রাপ্য মর্যাদা দিতে হবে।

ক্যারিয়ারে অর্জিত উল্লেখযোগ্য কোন কৃতিত্ত্বের কথা হারনেটের পাঠকদের সাথে শেয়ার করতে চান ?
সিংগেল মাদার হয়ে সংসার,সন্তান,ব্যবসা এক হাতেই সামলাচ্ছি ১২ বছর ধরে, এটাকে কৃতিত্বের পর্যায়ে ফেলা যায় কিনা জানিনা। তবে শেখারও অনেক কিছুই বাকী এখনো। উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব অর্জন করার মতো কিছুই করে উঠতে পারিনি এযাবৎ।

আপনার দুঃসময়ে সাহস এবং এগিয়ে যেতে উৎসাহ দিয়েছে এমন দুটি নাম যদি বলতে বলা হয় ?
বাবা,মা আর সন্তানের অনুপ্রেরণায় সফলতার মুখ দেখতে সক্ষম হয়েছি। মানসিক শক্তি যুগিয়েছে প্রতিটা মূহুর্তে।

ব্যবসায়ী হিসেবে যথেষ্ট সফল। নেতৃত্বে তাসনিম সিনহা কেমন?
কাজের জায়গাতে কঠোর হলেও কর্মীদের সাথে সম্পর্কেটা বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ । পরিবারের একজন বলেই মনে করি তাদের।
শত ব্যস্ততায়ও নিজেকে কিভাবে Relax রাখেন?
এখন যেহেতু ঘরবন্দি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যতটুকু আপনজন আর প্রিয় বন্ধুদের সাথে পারছি সময় কাটাচ্ছি। নিজের জন্য কাজের ফাঁকে কফি খাওয়ার সাথে বই কিংবা পত্রিকা পড়াটা মন্দ লাগেনা। বেশ স্বস্তি দেয় সন্তানদের নিয়ে নতুন কোনো জায়গা ভ্রমণ করে আসতে পারলে।

হারনেটের সাথে যুক্ত রয়েছেন।”এর পেছনের গল্পটা একটু জানতে চাই।
একজন নারী হয়ে নারীসমাজের কল্যাণ নিয়ে কাজ করব এটিই অনেক বড় আত্নতৃপ্তির বিষয়। প্রান্তিক পর্যায়ের নারীদের অনেক সফলতা, ব্যর্থতার চাপা পড়ে যাওয়া গল্পগুলো উঠে আসবে।পাশাপাশি হারনেটের “বৃদ্ধাশ্রম” প্রজেক্টটি নিয়েও কাজ করতে যাচ্ছি।

এশিয়ার প্রথম নারীভিত্তিক চ্যানেল হিসেবে হারনেট যাত্রা শুরু করেছে। এর সফলতা নিয়ে কেমনটা প্রত্যাশা করছেন ?
অবশ্যই একটি বিপ্লবী উদ্যোগ। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে চলতে এক সময় দেশ থেকে দেশে এর বার্তা ছড়িয়ে যাক এমনটাই প্রত্যাশা করি।
QUICK NOTE- ঝটপট উত্তর
আপনার strength & weakness ?
কাজ আমার strength এবং সন্তানেরা weakness।
কখন খুব রাগ হয় ?
যখন কেউ মিথ্যা বলে।
কোন বিষয়টা খুব আবেগতাড়িত করে ফেলে ?
মানুষের কস্ট দেখলে বেশি আবেগীভূত হয়ে পড়ি।
চারিত্রিক কোন গুন বা বৈশিষ্ট্য একটি মানুষের থাকা উচিৎ এবং কোনটি পরিহার করা উচিৎ ?
সততা থাকাটা খুব জরুরি।মিথ্যা বলাটা পরিহার করতে হবে।
তরুণ প্রজন্মের নারীদের জন্য আপনার কি উপদেশ থাকবে ?
ধৈর্য্যশীলতা আর আত্নবিশ্বাস।মেয়ে হওয়ায় অনেক বাধা আসতে পারে সেগুলো কাটাতে আত্নপ্রত্যয়ী হতে হবে সাথে ইতিবাচকতা খুব জরুরী।

হারনেটের প্রতিষ্ঠাতা আলিশা প্রধান সম্পর্কে আপনার অভিমত এবং উপদেশ জানতে চাইবো ।
আলিশা যে উদ্যোগটি নিয়েছে It’s highly appreciable. উপদেশ থাকবে মাঝপথে গিয়ে হালটা যেনো না ছেড়ে দেয়। হারনেট কে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোকেও এর আওতায় নিয়ে আসতে হবে এবং ক্রমান্বয়ে সারা বিশ্বে । তার এই পথে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে , উপদেশের পাশাপাশি আমাদেরকে এই অভূতপূর্ব সৃষ্টি হারনেট এর অংশীদার হতে হবে এবং এভাবেই HerNet বিশ্বে নারী কল্যানে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারবে আলিশার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে। তাই শেষে HerNet এর স্লোগান দিয়ে বলতে চাই We the Kalyar Replica Family “Holding Hands Together” with you.